মানুষের মত কথা বলতে পারে এই তিমি
আসলেই এটি একটি অবাক করা
বিষয়! তিমি মাছের বিভিন্ন জাতের মধ্যে প্রথমবারের মত মানুষের ভাষা বলতে শিখেছে এক কিলার
হোয়েল। এই তিমিটি ‘হ্যালো’ ও ‘বাইবাই’ সহ আরো বেশ কয়েকটি শব্দ বলতে শিখেছে। ফ্রান্সের একটি মেরিন পার্কে স্ত্রীলিঙ্গের
এই তিমিটি তার প্রশিক্ষকের অনুকরণে বলতে শিখছে নিত্যনতুন সব শব্দ। সে ওয়ান, টু, থ্রি
এবং একটি নাম বলতে পারে। অবাক করে দেয়ার মতো এই তিমির নাম উইকি। মানুষ এর পরে তিমি
ও ডলফিন হলো এমন দু’টি প্রাণী, যারা কোনো শব্দ শুনে শুনে তার অনুকরণ
করতে সক্ষম। সেইন্ট অ্যান্ড্রুস ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. জোসেপ কলের মতে, স্তন্যপায়ীদের
ক্ষেত্রে এমন ঘটনা খুবই বিরল। মানুষ যথেষ্ট ভালোভাবে পারলেও মজার ব্যাপার হলো, অন্যান্য
স্তন্যপায়ীদের মধ্যে এই ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি জলের নিচে বসবাসকারী স্তন্যপায়ীদের মধ্যে।
গবেষকেরা দেখতে চেয়েছিলেন কিলার হোয়েল জাতের তিমি অন্যদের অনুকরণ করে শব্দ উচ্চারণ
করতে সক্ষম কিনা। আর সেজন্যেই উইকি নামের ফ্রান্সের এই তিমির উপরে করা হয়েছিলো গবেষণা।
রেকর্ডিং থেকে শোনা যায়, তিমির মাথার কাছে অবস্থিত ছিদ্রের সাহায্যে এটি বিভিন্ন ধরনের
অর্থবহ শব্দ বলতে পারছে। ড. কল গণমাধ্যমে বলেন, আমরা যে তিমিটিকে পরীক্ষা করেছি, সেটি
অন্যান্য বুনো তিমির কণ্ঠস্বর নকল করতে পারে এবং মানুষের উচ্চারিত শব্দের অনুকরণ করতে
পারে। এ থেকে ধারনা করা যায় সমুদ্রে মুক্ত অবস্থায় থাকা তিমিগুলো তাদের নিজেদের মধ্যে
কণ্ঠের সাহায্যে ভাষা তৈরি করতে সক্ষম।
কিলার হোয়েল উইকি
কণ্ঠ অনুকরণ মানব প্রজাতির
একটি অদ্বিতীয় গুণ। এত বেশি ক্ষমতা অন্য কোনো প্রাণীর মধ্যে বেশ দুর্লভ। ডলফিন ও বেলুগা
জাতের তিমি চাইলে অন্য কোনো প্রাণী কিংবা নিজেদের মধ্যকার শব্দ অনুকরণ করতে পারে। টিয়া,তোতাসহ
কয়েকটি জাতের পাখিও মানুষের ভাষা বলতে সক্ষম। গবেষকেরা আশা করছেন, সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ
দিতে পারলে উইকি নামক এই তিমির সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের বাক্যবিনিময় করা সম্ভব হতেও
পারে। এর আগে বিখ্যাত ধূসর টিয়া ও ডলফিনের সঙ্গে মূকাভিনয়ের মাধ্যমে ভাব বিনিময় করা
সক্ষম হয়েছে।‘আমাকে ওইটা এনে দাও’ কিংবা ‘এই জিনিসটি
ওমুক জিনিসের ওপরে বা নিচে রেখে আসো’ এ ধরণের বাক্যগুলো তাদের আকার ইঙ্গিতে বোঝানো গিয়েছিলো। উইকি পানি থেকে
কিছুটা উঠে এসে ‘হ্যালো’ বা ‘বাই বাই’ জাতীয় কিছু শব্দ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। পানির নিচে চেষ্টা করলে হয়তো
শব্দগুলোর উচ্চারণ বেশ ভিন্ন হবে। যেহেতু এই গবেষণা কেবলমাত্র একটি তিমির ওপরেই করা
হয়েছে, তাই এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছেনা যে এই প্রজাতির অন্যান্য তিমিও এটি করার
সামর্থ্য রাখে কিনা। কিলার হোয়েল হলো ডলফিনগোত্রীয় প্রাণীদের মধ্যে আকারে সবচেয়ে বড়।
এটিকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিধর শিকারী। তারা অন্যান্য সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী যেমন
সীল, সী লায়ন ও অন্য জাতের তিমি খেয়ে বেঁচে থাকে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন