কয়েক যুগের স্নানের পোশাক
স্নান করার সময় বা পানিতে
দাঁপিয়ে বেড়ানোর জন্য মানুষ বিশেষ পোশাকের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিল অষ্টাদশ শতাব্দীতেই।
তখনকার সময়ে পাতলা উল এবং কটনের কাপড়ে তৈরি পোশাক পরে মানুষ স্নান করতো। পোশাকগুলোর
পানি শোষণের ক্ষমতা ছিল অনেক। এরপর সেই পোশাকের পরিবর্তন শুরু হতে থাকে বিংশ শতাব্দীতে।
এ সময় সাঁতারের পোশাক কিছুটা টানটান হতে শুরু করে। ইলাস্টিকের পাতলা কাপড়ের প্রচলন
শুরু হয়। রোদ থেকে বাঁচতে এখনকার হ্যাটের মতো ক্যাপের ব্যবহার শুরু হয়।
চারদিকে যখন পর্যটনের
প্রসার শুরু হলো, তখন গোসলের পোশাকেও বড়সড় পরিবর্তন এল। মূলত গোসলের আধুনিক পোশাকের
শুরুটা বিংশ শতাব্দীর শেষেই শুরু হয়। গোসলের পোশাকে যোগ হলো ছোট বেল্ট, সোনালি বোতাম।
এসব ‘অলংকার’ দেখেই তখন চেনা যেত কোনটা নারী কিংবা কোনটা পুরুষের। এ সময় সাঁতারের
পোশাক ছোট হয়ে যায়। তখন প্লাস সাইজের পোশাক পাওয়া যেত না। তবে এই বিশেষ পোশাকের সবচেয়ে
বড় পরিবর্তনটা হয় ১৯৪৬ সালের ৫ জুলাই থেকে। নৃত্যশিল্পী মিশেলিন বার্নারডিনি কেবল চারটা
ছোট ত্রিভুজে নতুন এক পোশাক প্যারিসিয়ান পুলে ক্যাসেরার সামনে আসেন, যা বিস্ময়ের সঙ্গে
প্রত্যক্ষ করে বিশ্ব। পোশাকটির নাম দেয়া হয় বিকিনি। এর ডিজাইন করেন লুই রেয়ার্ড। তিনিও
হয়ত জানতেন না যে, এটা নারীদের গোসলের পোশাকের স্টাইল বদলে দেবে চিরতরের জন্য।
নৃত্যশিল্পী মিশেলিন বার্নারডিনি
বিকিনির প্রচলন শুরু হয়ে
গেলেও বেশি ছোট হওয়ার কারণে অনেকেই তা পরতে চাইতেন না। তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে অলিম্পিক
সাঁতারু এস্থার উইলিয়ামসের পরা এক ধরনের পোশাক। তিনি ‘নেপচুন’স ডটার’ নামে একটা সিনেমায়
অভিনয় করেন, যা ১৯৪৯ সালে মুক্তি পায়। এতে তিনি আকর্ষণীয় স্নান-সৌন্দর্য্যের জন্য তারকাখ্যাতি
পেয়ে যান। ষাটের দশকে পপ আর্ট দৃশ্যপটে আসার পর জ্যামিতিক ধরণ ফ্যাশন জগতে প্রবেশ করা
শুরু করে। সেসময়েই আবার নারীদের সাঁতারের পোশাকে অগ্রাধিকারে থাকতো মাথা-ঢাকা। যেমনটা
করেছিলেন ইটালিয়ান অভিনেত্রী জিনা লোলোব্রিজিডা। ১৯৬২ সালে যখন উরসুলা অ্যান্ড্রেস
সাগর থেকে ওঠেন, তখন তার গায়ে ছিল দুটো আঁটোসাটো পোশাক৷ ওই সময় সিনেমামুখী ইহুদিরা
একে বর্জন করেছিল। ৪০ বছর পর হালে বেরি একই পোশাক পরে পানি থেকে বের হয়ে আসেন। গোসলের
পোশাক নিয়ে আরো অনেক ইতিহাস রয়েছে। যা নিয়ে নির্মিত হয়েছে আমেরিকান টিভি সিরিজ ‘বে-ওয়াচ’। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট করেই দেখে নিতে পারেন
সিরিজটি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন