আজকের দিনে বিলুপ্ত কিছু অদ্ভুত প্রাণী
চোরাশিকার কিংবা আবহাওয়ার
পরিবর্তনসহ নানাবিধ কারণে হারিয়ে গেছে বহু প্রাণী। কোনটিকে শেষ দেখা গিয়েছে ১৮৭০ সালে,
কোনটি আবার ১৯৩২ সালে। বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া সেই প্রাণীদের তালিকায় কী কী রয়েছে দেখে নেওয়া
যাক।
তাসমানিয়ান টাইগার:
অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়ায়
পাওয়া যেত এই বাঘ। একটা সময় সংখ্যায় প্রচুর ছিল এই বাঘ। লোকালয়ে ঢুকে পোষ্য প্রাণী
খেয়ে ফেলত বলে এদের হত্যা করা শুরু হয়। এভাবে ধীরে ধীরে সংখ্যাটা কমে আসে। ১৯৩৬ সালে
হোবার্টে চিড়িয়াখানায় শেষ দেখা গিয়েছিল এই বাঘ।
কোয়াগা:
‘কোয়া-হা-হা’ এই শব্দে ডাকত বলেই
এদের নাম দেওয়া হয়েছিল কোয়াগা। শরীরের কিছু অংশ বাদামি এবং কিছুটা সাদা-কালো ডোরাকাটা
দাগ দেখতে পাওয়া যেত। দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া যেত এদের। পৃথিবীতে এখন আর এর অস্তিত্ব
নেই। শেষ দেখা গিয়েছিল আমস্টারডামের একটি চিড়িয়াখানায়। ১৮৮৩ সালে সেটির মৃত্যু
হয়।
হিথ হেন:
আমেরিকা পূর্ব উপকূলে
এদের প্রচুর পরিমাণে দেখা যেত। দাবানল, প্রচুর পরিমাণে শিকার ও আবহাওয়া পরিবর্তনের
কারণে একেবারে লুপ্ত হয়ে যায় এই মুরগি। ১৯৩২ সালে শেষ দেখা গিয়েছিল এদের।
প্যাসেঞ্জার পায়রা:
উত্তর আমেরিকায় প্রচুর
পরিমাণে পাওয়া যেত এদের। সুস্বাদু মাংসের জন্য নেটিভ আমেরিকানরা এদের শিকার করতে শুরু
করে। ফলে এর সংখ্যা কমতে কমতে ১৮৭০-’৯০ সালের মধ্যে একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। মারথা
নামে এই প্রজাতির শেষ পায়রাটি বেঁচে ছিল সিনসিনাটি চিড়িয়াখানায়। ১৯১৪'তে সেটিও মারা
যায়।
পাইরিনিয়ান আইবেক্স:
স্পেন ও ফ্রান্স জুড়ে
বিস্তৃত পাইরিনি পর্বতমালায় এবং উত্তর এশিয়া ও আফ্রিকায় এই বুনো ছাগল দেখা যেত। ২০০০
সালে এই প্রজাতি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন প্রাণীবিদরা।
সিরিয়ার বুনো গাধা:
এই প্রজাতির গাধা এখন
আর দেখা যায় না। ১৫-১৬ শতকে ইরাক, ইসরায়েল, সিরিয়া, সৌদি আরব, তুরস্কে প্রচুর পরিমাণে
পাওয়া যেত এদের। মূলত মরুভূমি এবং রুক্ষ্ম অঞ্চলে এদের দেখা পাওয়া যেত। ১৮-১৯ শতকে
চোরাশিকারের কারণে এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ব্যাপক প্রভাব পড়ে এই প্রাণীদের উপর। ভিয়েনায়
শেষ বুনো গাধাটির মৃত্যু হয় ১৯২৮-এ।
বাইজি ডলফিন:
চীনে এদের ‘গডেস অব ইয়াংসি’ বলা
হয়। খুব শান্ত স্বভাবের হালকা গোলাপি রঙের এই ডলফিন। শিল্পায়ন এবং ইয়াংসি নদীতে মাত্রাতিরিক্ত
মাছ ধরার কারণে এই প্রজাতি ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যায়। ২০০৬-এ এই ডলফিনকে বিলুপ্ত ঘোষণা
করে চীন।
জাভা টাইগার:
ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে
৬০-এর দশকে দেখা মিলত এই বাঘের। বসতি বাড়তে থাকায় বনজঙ্গল কমে আসা এবং চোরাশিকারের
কারণে এই বাঘ বিলুপ্ত হয়ে যায়। ১৯৮০ সালে শেষ দেখা গিয়েছিল এই বাঘ।
গোল্ডেন টোড:
১৯৮৯ সালে এই ব্যাঙ শেষ
বার দেখা গিয়েছিল কোস্টারিকার মন্তেভেরদেতে। সায়েন্স ম্যাগাজিনের রিপোর্ট বলছে, উষ্ণায়ণের
কারণেই হারিয়ে গিয়েছে এই ব্যাঙ। ১৯৬৪'তে এই ব্যাঙ প্রথম আবিষ্কার করেন হার্পেটোলজিস্ট
জে স্যাভেজ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন